বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৮ অপরাহ্ন
গাজায় বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছুঁইছুঁই। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে গাজাজুড়ে তীব্র হামলা চালানো হয়েছে। এতে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
গাজা সিটির পশ্চিমে শাতি শরণার্থী শিবিরের একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় এক শিশু এবং তার মা প্রাণ হারিয়েছেন।
সম্প্রতি গাজা সিটিতে বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। রাতভর ভারী বিমান হামলার মধ্যেই শহরটির বিভিন্ন অংশে ইসরায়েলের স্থল সেনারা প্রবেশ করেছে। এরপর থেকেই হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে উপকূলীয় রাস্তা দিয়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়।
গাধার গাড়ি, ঠেলাগাড়ি অথবা হেঁটে বিপুল পরিমাণ ফিলিস্তিনিকে শহরের দক্ষিণ দিকে ছুটে যেতে দেখা গেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফ’র তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ গাজা শহর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। যদিও ধারণা করা হচ্ছে যে, এ সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি।
অনেক ফিলিস্তিনি বলছেন যে, দক্ষিণ এবং মধ্য গাজাও নিরাপদ নয়; কারণ সেখানেও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আবার কেউ কেউ জানিয়েছেন, দক্ষিণে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তাঁবু খাটানোর জায়গা পাননি, তাই তারা গাজা শহরে আবারো ফিরে এসেছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, হামাসের ‘শেষ প্রধান দুর্গ’র বিরুদ্ধে একটি ‘শক্তিশালী অভিযান’ শুরু করা হয়েছে। যদিও এই আক্রমণকে ‘সম্পূর্ণ এবং সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক।
এছাড়া ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে জাতিসংঘের একটি তদন্ত কমিশন। নতুন একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে কোনো সংঘাত বা যুদ্ধে যে কর্মকাণ্ডগুলো করলে তা গণহত্যা বলে গণ্য হয়, গাজার ক্ষেত্রে এমন পাঁচটি কাজের চারটিই করেছে ইসরায়েল।
একটি গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা, তাদের গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করা, ইচ্ছাকৃতভাবে গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিত পরিস্থিতি তৈরি করা এবং জন্ম রোধ করা। এর প্রতিটি ইসরায়েল গাজায় করেছে বলে দাবি করা হয়েছে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে।
এমনকি ইসরায়েলের নেতাদের বিবৃতি এবং তাদের সেনাবাহিনীর আচরণের ধরনকে গণহত্যার প্রমাণ হিসেবেও উল্লেখ করেছে। যদিও এই প্রতিবেদন স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা এটিকে ‘বিকৃত এবং মিথ্যা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।
দুই বছর ধরে চলা এই সংঘাতে প্রায় ৬৪ হাজার ৯৬৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩১২ ফিলিস্তিনি। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টিটিএন